সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪
২০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈদ্যুতিক ইঁদুর মারার ফাঁদে প্রাণ গেল তরুণের

অনলাইন ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, নভেম্বর ৩, ২০২৪

বৈদ্যুতিক ইঁদুর মারার ফাঁদে প্রাণ গেল তরুণের
মনিরুজ্জামান মনি, কয়রাঃ
খুলনার কয়রা অবৈধ ইঁদুর মারার বৈদ্যুতিক ফাঁদে বিদ্যুতায়িত হয়ে সুজন গাজি (১৮) নামের এক যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ রবিবার (৩ নভেম্বর) ভোর ৫টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ মহারাজপুর বিলের তারিকুল ইসলাম শিলনের ধানক্ষেতে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে আজ রবিবার সকাল ৯টায় ঘটনা স্থান থেকে কয়রা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। নিহত সুজন গাজি মহারাজপুর গ্রামের আরশাদ আলী গাজীর ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, নিহত সুজন গাজি প্রতিদিনের ন্যায় ঘেরের মাছ ধরা আটন ঝাড়তে যাচ্ছিলেন। এ সময় পার্শ্ববর্তী তারিকুল ইসলাম শিলনের ধান ক্ষেতে ইঁদুর মারার বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে তার মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে নিহতের ভাই রফিকুল ইসলাম ঘেরে যাওয়ার সময় তার মরদেহ দেখতে পান।

জানা যায়, ইঁদুরের উৎপাত থেকে ফসলের রক্ষা করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যুৎ দিয়ে তৈরি ইঁদুর মারা ফাঁদ পেতে ইঁদুর নিধন করছেন কয়রা উপজেলা কয়েক শত কৃষক।

প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ না থাকায় এতে একদিকে যেমন মানুষ ও পশু প্রাণী চরমভাবে মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে অপরদিকে বিদ্যুতের অপচয়সহ সরকারি সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে।

গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর ধান খেতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে ইঁদুর নিধন করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাগালি ইউনিয়নের গাজীনগর গ্রামের ইসমাইল মোড়লের পুত্র খোকন মোড়ল (৪৫) ও ১০ ফেব্রুয়ারি আমাদী ইউনিয়নের বেজা পাড়া গ্রামে সবুর সানার পুত্র ইয়াছিন সানার (২৫) মৃত্যুসহ কয়েকটি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়। বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এই ধরনের মরণ ফাঁদ তৈরি রোধ করা না গেলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছেন সাধারণ কৃষক ও সচেতন মহল।  

স্থানীয়দের অভিযোগ, মাঠ পর্যায়ে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তদারকি না থাকার কারণে কিছু অসাধু কৃষকরা ইঁদুর মারতে চুরি করে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে রাখেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ১৪ জন সার্বক্ষণিক বোরো ধানের ক্ষেত পরিদর্শন করে ইঁদুর নিধন বিষয়ে কৃষকদের নানা কৌশল বা পরামর্শ প্রদান অব্যাহত আছে। এতে চাষিরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।’

কয়রা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার পূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিক্যাল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।’

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রুলি বিশ্বাস বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এই ধরনের মরণ ফাঁদ তৈরি করা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের বিষয়টি মাইকিং করে সবাইকে অবহিত করার জন্য বলা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’
0 Comments